পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নামহট্ট মেলা

Aug 08, 2022

নামহট্ট ভবন, শ্রীধাম মায়াপুর, নদীয়া: দীর্ঘ প্রায় ৩ বছর প্রতীক্ষার পর গত ০২/০৮/২০২২ থেকে ০৩/০৮/২০২২ পর্যন্ত আবারও মহা সমারোহে অনুষ্ঠিত হল, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ তথা ইসকন নামহট্ট কর্তৃক পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নামহট্ট মেলা উৎসব। ০২/০৭/২০২২ তারিখে বৈকাল ৩:৩০ ঘটিকায় ভজন কীর্তন, জয়ধ্বনি, শঙ্খধ্বনি, উলুধ্বনি, মঙ্গলাচরণ, বৈদিক মন্ত্র উচ্চারন ও মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলনের  মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়। এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ইসকনের প্রতিষ্ঠাতা ও আচার্য্য কৃষ্ণকৃপাশ্রীমূর্তি অভয়চরণারবিন্দ ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদের অন্যতম কৃপাধন্য শিষ্য,অন্যতম গুরু তথা ইসকন নামহট্টের বিশ্ব প্রচারক মন্ত্রী, ইসকন মায়াপুর চন্দ্রদয় মন্দিরের নির্দেশক, ওম বিষ্ণুপাদ অষ্টতরশত শ্রী শ্রীমৎ জয়পতাকা স্বামী গুরু মহারাজের নেত্রীস্থানীয় শিষ্যবর্গের  মধ্যে অন্যতম শিষ্য, নামহট্টের চিফ রিজিওনাল ডাইরেক্টর তথা ত্রিদন্ডি সন্ন্যাসী শ্রী শ্রীমৎ গৌরাঙ্গ প্রেম স্বামী মহারাজ, নামহট্টের অন্যতম কো-রিজিওনাল ডাইরেক্টর শ্রী শ্রীমৎ ভক্তিবিলাস গৌরচন্দ্র স্বামী মহারাজ, কো-রিজিওনাল ডাইরেক্টর পূজ্যপাদ পদ্মনেত্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু, পূর্ব মেদিনীপুর জেলা নামহট্টের জেলা প্রচারক তথা পূজ্যপাদ ভাগবত কীর্তন দাস ব্রহ্মচারী প্রভু, পূজ্যপাদ নন্দ দুলাল হরিদাস ব্রহ্মচারী প্রভু, এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর জেলার মালা সেনাপতি পূজ্যপাদ সুসখা সুবল দাস প্রভু এবং  মালা সেনাপতি পূজ্যপাদ জয় শ্যামসুন্দর দাস প্রভু এবং অন্যান্য ভক্তবৃন্দ।

অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে পূজ্যপাদ ভাগবত কীর্তন প্রভু এবং রসরাজ প্রভুর সুমধুর কণ্ঠে ভজন কীর্তন পরিবেশিত হয়। এরপর এক বৈদিক নৃত্যের মধ্য দিয়ে এই অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন হয়। এরপর এইস্থানে উপস্থিত প্রায় ৪৫০০ ভক্তদের উদ্দেশ্যে পূজ্যপাদ পদ্মনেত্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু হরিকথা প্রবচন প্রদান করেন। প্রভুর পাঠ প্রদানের পর প্রথম দিনের প্রথম পর্বের অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয় এবং সমস্ত ভক্তরা মূল মন্দিরে সন্ধ্যারতিতে যোগদান করেন। 

এরপর দ্বিতীয় পর্বে অনুষ্ঠানের প্রারম্ভে পুজ্যপাদ ভাগবত কীর্তন দাস ব্রহ্মচারী প্রভু কীর্তন পরিবেশন করেন এবং  শ্রীমৎ ভক্তিবিলাস গৌরচন্দ্র স্বামী মহারাজ নামহট্টের গাঠনিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে প্রবচন প্রদান করেন। এরপর এই স্থানে বৈদিক নাটক ও বৈদিক নৃত্য পরিবেশিত হয়। সবশেষে সমস্ত ভক্তদের উদ্দেশ্যে মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।

পরদিন অর্থাৎ ০৩/০৮/২০২২ তারিখে সমস্ত ভক্ত মূল মন্দিরে মঙ্গলারতিতে অংশগ্রহণ করেন এবং মঙ্গলারতির পর সকলে নামহট্টে উপস্থিত হন এবং ইসকনের অন্যতম কো রিজিওনাল ডাইরেক্টর পূজ্যপাদ সুমধুর গৌর প্রভু ভক্তদের উদ্দেশ্যে জপশিক্ষা প্রদান করেন। এরপর পূজ্য ভাগবত কীর্তন প্রভু ভজন কীর্তন পরিবেশন করেন। প্রভুর কীর্তনের পর পূজ্যপাদ প্রেমাঞ্জন দাস প্রভু হরিকথা প্রদান করেন। প্রভুর পাঠ প্রদানের পর উপস্থিত ভক্তদের উদ্দেশ্যে প্রাতঃকালীন মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়। মহাপ্রসাদের পর এইস্থানে ভজন প্রতিযোগিতা, গীতার শ্লোক আবৃতি, কুইজ প্রতিযোগিতা পরিবেশিত হয়। এরপর ভক্তরা গঙ্গা স্নানের উদ্দেশ্যে গমন করেন এবং মধ্যাহ্নকালীন মহাপ্রসাদ গ্রহণ করেন।

মহাপ্রসাদের পর বৈকাল ৪:০০ ঘটিকায় রসরাজ প্রভুর সুমধুর কন্ঠে ভজন কীর্তনের অনুষ্ঠানের শুভারম্ভ হয়। ভজন কীর্তনের পর এই স্থানে পূজ্যপাদ পদ্মনেত্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু উপস্থিত ভক্তদের উদ্দেশ্যে মহাপ্রভুর সন্ন্যাস লীলাকথা প্রবচন প্রদান করেন। এরপর পূজ্যপাদ কমলাপতি দাস ব্রহ্মচারী প্রভু ভক্তদের উদ্দেশ্যে হরিকথা প্রবচন প্রদান করেন। প্রভুর পাঠ প্রদানের পর এই স্থানে বৈদিক নৃত্য ও বৈদিক নাটক পরিবেশিত হয়। 

এরপর উপস্থিত ভক্তদের পুরস্কার বিতরণ করা হয় ও মহাপ্রসাদ বিতরণ করা হয়।

৪/০৮/২০২২ মূল মন্দিরে মঙ্গল আরতির পর উপস্থিত ভক্তদের সাথে নিয়ে কীর্তন সহযোগে পরিক্রমার মাধ্যমে শ্রী মহাপ্রভুর জন্মস্থান অর্থাৎ যোগপিঠ দর্শনের উদ্দেশ্যে গমন করা হয়। এইদিন মহাপ্রভুর জন্মস্থানে পূজ্যপাদ পদ্মনেত্র দাস ব্রহ্মচারী প্রভু উপস্থিত ভক্তদের উদ্দেশ্যে  মহাপ্রভুর বাল্য লীলাকথা প্রবচন প্রদান করেন। প্রভুর পাঠ প্রদানের পর উপস্থিত ভক্তরা নামহট্টে প্রাতঃকালীন মহাপ্রসাদ গ্রহণ করেন এবং নিজে নিজে শ্রদ্ধাকুটিরে প্রচারের উদ্দেশ্যে গমন করেন।